Friday, March 12, 2010

হংকং এর আকাশে উড়তে পারছে না পরিয়ায়ী পাখিরা

Reports in http://www.dw-world.de/dw/article/0,,5346608,00.html?maca=ben-standard_feed-ben-615-xml

 

হংকং এর আকাশ ফুঁড়ে উঠছে সুউচ্চ সব ভবন৷ এতই উচু হচ্ছে ভবনগুলো যে এর উপর দিয়ে পাখিরা উড়ে যেতে পারছে না৷ সমুদ্রের বুকে মাটি ভরাট করে উদ্ধার করা হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা৷ সেখানে গড়ে উঠছে শহর৷ সমস্যা বেঁধেছে এই উন্নয়ন নিয়েই৷

 

কয়েকদিন আগে পাখি বিষয়ক এক খবরে বলা হলো দাগি লেজ জৌরালি বা বার ‘টেইলড গডউইট' নামের একটি জলচর পাখি আকাশে বিরতিহীনভাবে সাত হাজার ২০০ মাইল পাড়ি দিয়েছে৷ শীতকালে অতিথি পাখির হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দেওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়৷ কিন্তু টানা আট দিনের বেশি স্থায়ী ভ্রমণ এবং এ ভ্রমণে সাত হাজার ২০০ মাইল পাড়ি এই প্রথম পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ এ পাখিটি সুদূর আলাস্কা থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পার হয়ে নিউজিল্যান্ডে পৌঁছায়৷ এ সময় পাখিটি কোনো বিশ্রাম নেয়নি, খাবারও গ্রহণ করেনি৷ বিজ্ঞানীরা পাখিটির গতিবিধি রেকর্ড করে বলেছেন, প্রাণিজগতে এমন ঘটনা অভূতপূর্ব৷ এটি একটি উদাহরণ মাত্র৷

শীতের পাখিরা, গ্রীস্মের পাখিরা
আমরা জানি, উত্তরের বরফাবৃত এলাকা থেকে অনেক পাখি প্রতিবছর শীতকালে বাংলাদেশসহ অন্যান্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে আসে৷ শীতের শেষে এরা আবার উত্তরে ফিরে যায়৷ এরাই ‘পরিযায়ী পাখি'৷ এদের অতিথি পাখি বা শীতের পাখিও বলা হয়৷ তবে এরা মোটেও অতিথি নয়, এরা আসলে দুই অঞ্চলের বাসিন্দা৷ যে দুই অঞ্চলে এরা শীত ও গ্রীষ্মকাল কাটায় দুই অঞ্চলই এদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য৷ বাংলাদেশে যেসব পরিযায়ী পাখি দেখা Bildunterschrift: Großansicht des Bildes mit der Bildunterschrift:  যায় তার অধিকাংশই আসে শীতকালে৷ পরিযায়ী পাখিরা কিন্তু আসে এক পথ ধরেই ফি বছর৷ কিন্তু এই পথে যদি বাধা আসে? আসে বলছি, কেন বলা যায় এসেছে৷ হংকং এর নাম তো আমরা সকলে জানি৷ এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠছে হংকং৷
উড়ার পথ রুদ্ধ
২৬০ টিরও বেশি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলটি পার্ল রিভার ব-দ্বীপের পূর্ব দিকে অবস্থিত৷ উত্তরে চীনের কুয়াংতুং প্রদেশ এবং পূর্ব, পশ্চিম আর দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর৷ ১৯৮২ সালে হংকংয়ের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫.২ মিলিয়ন৷ ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত হংকংয়ের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ হারে বেড়েছে৷ হংকংয়ের আয়তন প্রায় ১,০৬০ বর্গ কিলোমিটার৷ এর অধিকাংশ এলাকাই অনুর্বর পাহাড়ি ৷ 
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হংকংয়ের  মানষের আবাস আর অফিসের জায়গা দেয়ার জন্য নতুন এলাকায় নতুন শহরাঞ্চল তৈরি করা হয়েছে৷ পুরনো ব্যবসা-বাণিজ্যভিত্তিক শহরগুলোকে বাড়ানো হয়েছে৷ সমুদ্রের বুকে মাটি ভরাট করে উদ্ধার করা হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা৷ সমস্যা বেঁধেছে এই উন্নয়ন নিয়েই৷ উন্নয়নের চিত্র এতটাই প্রকট এবং দ্রুত যে সেখানে একের পর এক গড়ে উঠছে সুউচ্চ ভবন৷ প্রকৃতিবিদরা বলছেন, হংকং এ যে এলাকায় সবচেয়ে বেশী  আকাশ ফুঁড়ে ভবনগুলো মাথা তুলছে, সেই মাই পো এবং আশেপাশের এলাকাই হচ্ছে পরিযায়ী পাখিদের যাতায়াতের হংকংBildunterschrift: Großansicht des Bildes mit der Bildunterschrift:  হংকংসবচেয়ে বড় রুট৷ এই পথে আগে লাখ লাখ পাখি যাতায়াত করতো, এবার সেখানে ভিন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে৷ ভবনগুলোর কারণে সরু পথে তাদের উড়তে বেশ কষ্ট হচ্ছে৷ অনেকটা চিঁড়ে চ্যাপ্টা হবার মত দশা হয়েছে তাদের৷
মাছ পাখিদের অবস্থা
এক হিসাবে দেখা গেছে এই পথে পরিযায়ী পাখিরা সাইবেরিয়া এবং আশেপাশের প্রচণ্ড শীতের দেশ থেকে উষ্ণতার সন্ধানে এশিযার দিকে চলে আসে৷ নানা আকারের পাখি উড়ে যায় এশিয়ায়৷ কোন কোন পাখির দল থেমে যায় হংকং এ-ও৷ তারা পার্শ্ববর্তী সিনজেন নদী এবং আশেপাশের জলাশয়গুলোতে নেমে পড়ে, সাঁতরে বেড়ায় খেলা করে৷ কিন্তু অবস্থা এতটাই বেগতিক যে সমুদ্র এবং নদী ভরাট করার কারণে তাদের সাঁতরে বেড়াবার জায়গাও রুদ্ধ৷ কেবল পাখিদের কথা বলছি কেন, মাছেদেরও একই অবস্থা৷
প্রকৃতি বাঁচাতে নতুন উদ্যোগ
তবে হংকং এর এই এলাকার মধ্যে কিছুটা রয়েছে রামসার জোনে, যেখানকার পরিবেশ এবং প্রতিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি আইন করা৷  কিন্তু অন্য এলাকাগুলোয় কী হবে, পাখি এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবির মুখে সেখানকার কর্তৃপক্ষ এখন ব্যবস্থা নেবার কথা ভাবছে৷ বিশেষ করে জমির মালিক এবং ভবন নির্মাতাদের জন্য এমন কিছু আইন করে দেবার কথা চিন্তা করছে, যার ফলে পাখিদের উড়ে যাবার পথে বাধা সৃষ্টি না হয়, অযাচিতভাবে জলাভুমিগুলো যেন ভরে ফেলা না হয়৷ এ জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা নিয়োগ করা হয়েছে৷ কাজে লাগানো হচ্ছে স্থানীয় বেসরকারী সংগঠনগুলোকে৷ তাদের আশা সঠিক পরিকল্পনা মোতাবেক এগিয়ে গেলে হয়তো তা হবে পাখি এবং পরিবেশ বান্ধব৷ 
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

1 comment:

  1. That was awesome! Probably one of the more interesting reads in awhile. Damn interesting......

    green planet

    ReplyDelete